
পিরোজপুর সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্রদল ও জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ইমরান আহম্মেদ সজিবের জীবনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতি করাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একের পর এক হামলা, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার এই তরুণ নেতা বারবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, কারাগারে থেকেছেন এবং লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটেছে।
ইমরান আহম্মেদ সজিব ২০০৩ সালে পিরোজপুর সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রদলের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই থেকে তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রদল ও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন। কিন্তু এই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডই তাকে আওয়ামী লীগ সরকার ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর টার্গেটে পরিণত করে।
সজিবের বিরুদ্ধে পিরোজপুর ও ঢাকার বিভিন্ন থানায় মোট ৪২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীরা তাকে ★৯ বার হামলা করে গুরুতর আহত করেছে। পুলিশও তাকে
★৮ বার নির্যাতন ও গ্রেফতার করেছে।
★২০২৩ সালে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে খুলনায় সমাবেশে যাওয়ার পথে শ্রমিক লীগের হামলায় আহত হন।
★২০২২ সালে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসে পুলিশের গুলি ও টিয়ারসেলের শিকার হয়ে গ্রেফতার হন এবং থানা হাজতে নির্যাতনের শিকার হন।
★২০১৮ সালে পিরোজপুর জেলা বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশি হামলায় আহত হন।
★২০১৭ সালে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।
★২০১৬ সালে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকালে পুলিশি হামলায় আহত হন তিনি ও আরও ৩৭ নেতা-কর্মী।
★২০০৯ সালে ছাত্রদলের কাউন্সিলে ছাত্রলীগের হামলায় কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয় তাকে। একই বছর কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তার শেখপাড়াস্থ বাড়িতে হামলা চালানো হয়, ফলে তাকে পিরোজপুর ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়।
এতসব নির্যাতন সত্ত্বেও ইমরান আহম্মেদ সজিব ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে সরে যাননি। সম্প্রতি জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পিরোজপুরে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার সৈনিক হিসেবে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের জন্য কাজ করব। রাষ্ট্র গঠনে তারেক জিয়ার ৩১ দফা বাস্তবায়নে সংগ্রাম চালিয়ে যাব।
সজিবের ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতা ও বিরোধী দলীয় কর্মীদের ওপর নিপীড়নের একটি উদাহরণ। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উচিত এমন ঘটনাগুলো তদন্ত করে আইনের শাসন নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই হোক, কোনো নাগরিকেরই নির্যাতন ও মামলার ফাঁদে পড়ে জীবন বিপন্ন হওয়া উচিত নয়।
ইমরান আহম্মেদ সজিবের সংগ্রাম শুধু একটি ব্যক্তির লড়াই নয়, এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের প্রতীক। তার মতো তরুণদের ত্যাগ ও সংগ্রামই ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে।